“অমানী এবং নিশাতের প্রেমকাহিনী”
নায়ক দিনরাত কাজ করে ঋণশোধে টাকা জোগাড় করে। নায়িকা একমাত্র সন্তান এবং আত্মমগ্নতা রোগে আক্রান্ত। পরিচিত পাত্রের কাছে বিয়ে দেওয়ার জন্য নায়িকাকে সাথে নিয়ে মা বাবা দেশে আসেন। বিকালে বেড়াতে বেরিয়ে পার্কের গাছে অমানিশাত লেখা দেখে নায়িকা মোহগ্রস্ত হয়। এমন সময় ছিনতাইকারীরা তাদেরকে আক্রমণ করে গলার হার হাতের বালা ছিনিয়ে হাত ধরে জোরাজুরি করলে নায়িকা গায়ের জোরে চিৎকার করে। নায়ক দৌড়ে গেলে মারামারি শুরু হয় এবং ছিনতাইকারী তার মাথায় বাড়ি মারে। এসব সাজানো নাটক ছিল যা নায়ক অথবা নায়িকার মা বাবা কেউ জানেনা। নিরাপত্তার সাথে মা বাবা নায়িকাকে নিয়ে বিদেশ ফিরে যান। ঋণশোধে পর ঘটনা জানাজানি হলে নায়কের মা বাবা তাকে বিদেশ যাওয়ার আদেশ করেন, বিনা বাক্যব্যয়ে সে চলে যায় এবং সেখানে তাদের বিয়ে হয়।
অর্থোপার্জনে ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য নিশাত নামের যুবক সার্কিট হাউসের ব্যস্ততম চা’র দোকানে আজ্ঞাবহের কাজে করে। সার্কিট হাউস রোডে যানজট লেগে নিবন্ধন দফতরে আদান-প্রদান প্রকট হলে, আড়াআড়িভাবে থার্মোফ্লাস্ক এবং থার্মোব্যাগ কাঁধে নিয়ে সে বেরোয়। দূর দূরান্ত থেকে যারা কার্যালয়ে আসে, গরম চা পরোটার জন্য ওরা তাকে বকশিশ দেয়। যাই হোক, জলখাবারের পালা শেষে করে থার্মোফ্লাস্ককে ঢোলের মত বাজিয়ে গুনগুন করে হাঁটছিল। হঠাৎ আকাশ ঝামরিয়ে বাজ ফেটে বিজলি চমকালে, "লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ" বলে দৌড় দেয়। তখন কীন ব্রীজের মুখে বাস থেমে দরজা খুললে নামবে কি না নামবে নিয়ে দুই বান্ধবী দোটানে পড়ে। তাদের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভার বললো... “বৃষ্টিজলে পথঘাট পিচ্ছল হয়েছে। আগপাছ করলে পা পিছলাবে। দয়া করে সাবধানে নামুন।” “আপনাকে ধন্যবাদ?" একসাথে বলে বান্ধবীদ্বয় বাস থেকে নেমে এদিক-ওদিক তাকিয়ে এক বান্ধবী ডেকে বললো... "শাইরা চল, সার্কিট হাউসে চা সিঙারা খাব।" “তুই খা যেয়ে, আমি এখন ঝালমুড়ি খাব।” বলে শাইরা ডানে বাঁয়ে থাকিয়ে দ্রুত রাস্তা পেরিয়ে সার্কিট হাউস পার্কে প্রবেশ করলে আকাশ ভেঙে ঝেঁপে বৃষ্টি ঝরে। যেন একেবারের বর্ষণে শহর ডুবাবে। শাইরা দ্রুত হেঁটে গাছের নিচে যায়। নিশাত তখন দু হাতে চুল ঝাড়ছিল। শাইরা কপাল কুঁচকে তাকালে, কপট হেসে নিশাত বললো... "বাজ ফেটে ঠাঠা পড়লে আমার চোখে ছানি পড়ে। বৃষ্টিপাত যেমন তেমন বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।” "আমাকে শুনাচ্ছ কেন, নানীর মত পাথালি কোলে লয়ে অভয় দিতে হবে নাকি?" বলে শাইরা মুখ বিকৃত করে। ওর কথায় কান না দিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে দু হাতে মাথা চেপে ধরে গাছে হেলান দিয়ে বসে নিশাত বললো... "মারধর করলেও আমি এখন সার্কিট হাউসে যাব না। হঠাৎ শর্ট সার্কিট হলে আমার মাথায় ঠাঠা পড়বে।" শাইরা :.. “ঠাঠাবাজকে সত্যি ভয় পাও নাকি?" নিশাত :.. "আমি তাকে চিনি না। আপনি তাকে চিনেন নাকি?" শাইরা :.. "এই একটু আগে বলেছিলে, বাজ ফেটে ঠাঠা পড়লে তোমার চোখে ছানি পড়ে।" নিশাত :.. "ও আচ্ছা, ঠাঠা এবং বাজ দুটাকে আমি ভয় পাই। একবার সামান্যের জন্য একটা আমার মাথায় পড়েছিল। ভ্যাগিস আমি তখন ভূগর্ভে ছিলাম, পার্কে থাকলে নির্ঘাত বজ্রাহত হতাম।" শাইরা :.. "ভূগর্ভে কী করছিলে?" নিশাত :.. "আঁতের খবর জানার জন্য এত প্রশ্ন করছেন কেন?" শাইরা :.. “ঠিকাছে, আর প্রশ্ন করব না।" “আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।” বলে নিশাত ডানে বাঁয়ে উপরে নিচে তাকিয়ে কাঁধ ঝুলিয়ে বললো... “আমি এখন কী করব?” শাইরা :.. “কী করতে চাও?” নিশাত :.. "আপনার সম্যসা কী, বার বার প্রশ্ন করেন কেন?” নিরুত্তর শাইরা নিচে তাকিয়ে পাথর হাতে নিয়ে গাছের গায়ে লিখতে চেয়ে নিম্নকণ্ঠে বললো... "অমানিশাত।" “আপনি আমার নাম জানেন কেমনে?” সবিস্ময়ে বলে নিশাত কপাল কুঁচ করলে, থতমত খেয়ে শাইরা বললো... “আমি তোমার নাম জানি না।” নিশাত :.. "সবেমাত্র আপনি আমাকে নাম ধরে ডেকেছেন।" শাইরা :.. "তোমার নাম কী?” নিশাত :.. "আমার নাম নিশাত।" শাইরা :.. “আমার সাথে ঠাট্টা করছ নাকি?” নিশাত :.. “হেঁটমুণ্ড হওয়ার জন্য আপনার সাথে ঠাট্টা করব কেন?” “গাছের দিকে তাকিয়ে আমি অবাক হয়েছিলাম। অনিমিখে দেখলে তুমি নির্বাক হবে।” বলে শাইরা মাথা দিয়ে ইশারা করে। গাছের দিকে তাকিয়ে ভয় বিস্ময়ে চমকে নিশাত বলল… “বাজ ফেটে ঠাঠা এখন আমার চৌকাঠে পড়বে।” শাইরা :.. “কী বলছ এসব?’ “বলতে চেয়েছিলাম, মেঘ কেটে আকাশ পরিষ্কার হয়েছে।” বলে নিশাত ভোঁ-দৌড়ে রাস্তা পেরিয়ে দোকানে প্রবেশ করে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো... "মুন্না, কাজিদের জন্য মজাদার চা বানা, আমি একটু জিরাব।" মুন্না :.. “আজ এত সহাসী হলে কেমনে, কেউ তোমাকে সাহস কর্জ দিয়েছি নাকি?”
তারপর পড়ার জন্য ইবই ডাউনলোড করুন
Kathasilpa is an ebook publishing website
You must be logged in to post a comment.